শরীরের পানি শূন্যতা দূর করার উপায়
আপনার কি মাঝে মাঝেই ত্বক শুষ্ক লাগে,কিংবা ক্লান্ত বোধ করেন বা বারবার পিপাসা পায়? আচ্ছা আপনার কি কখনো মাথা ঘোরার অনুভূতি হয়েছে, অথচ বুঝতে পারেননি কেন? আপনি কি জানেন, শরীরের ৬০% এর বেশি অংশই পানি দিয়ে গঠিত? তাহলে পানির অভাবে কি কি হতে পারে, তা নিয়ে কোনো ধারণা আছে আপনার? তাহলে আজকের কন্টেন্ট টি আপনাদেরই জন্য।
এতক্ষণে নিশ্চয়ই টাইটেল আর আমাদের পানি শূন্যতা নিয়ে এত কৌতূহল দেখে আপনাদের আর বুঝতে বাকি নেই যে, আজকের কন্টেন্ট টি হতে চলেছে পানি শূন্যতা নিয়ে। পানি শূন্যতার কারণে হওয়া বিভিন্ন সমস্যার কথা তো থাকবেই তার সাথে আরও থাকবে শরীরের পানিশূন্যতা কিভাবে দূর করা যায় তার উপায়।
সূচিপত্র :-
১. পানিশূন্যতা কি?
২. পানিশূন্যতার লক্ষণ
৩.পানিশূন্যতার ক্ষতিকর প্রভাব
৪.শরীরের পানিশূন্যতা দূর করার উপায়
৫. বিশেষ পরামর্শ
৬. মন্তব্য
১. পানিশূন্যতা কি?
পানিশূন্যতা হলো শরীরের প্রয়োজনীয় পানির ঘাটতি যা স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় কার্যক্রম ব্যাহত করে। আমাদের দেহের প্রায় ৬০% অংশই পানি দিয়ে গঠিত, যা কোষ, টিস্যু এবং বিভিন্ন অঙ্গপ্রতঙ্গ সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। যখন শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি বের হয়ে যায়, কিন্তু তা পূরণ করা হয় না, তখন পানিশূন্যতা দেখা যায়। ইংরেজিতে একে ডিহাইড্রেশন বলে। এটি সাধারণত অতিরিক্ত ঘাম, ডায়রিয়া, বমি প্রস্রাবের পরিমান বেড়ে যাওয়া বা পর্যাপ্ত পানি না পান করার কারণে হয়। পানিশূন্যতার কারণে দেহে নানান ক্ষতিকর সমস্যা দেখা দিতে পারে। ক্লান্তি, মাথা ঘোরা, মনোযোগ ঘাটতি, ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া এবং প্রস্রাবের রঙ গাঢ় হওয়া ইত্যাদি সব পানিশূন্যতারই লক্ষণ। দীর্ঘস্থায়ী পানিশূন্যতা কিডনি ও হৃদযন্ত্রের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। শিশু ও বৃদ্ধরা এই সমস্যায় বেশি আক্রান্ত হয়। কারণ তাদের শরীরের পানির ভারসাম্য দ্রুত পরিবর্তিত হতে পারে। গরম আবওহাওয়া বা অতিরিক্ত পরিস্রমের ফলে শরীর থেকে বেশি ঘাম বের হলে পানির অনেক ঘাটতি দেখা যায়, যা পানিশূন্যতার ঝুঁকি কমায়।
এই সমস্যাগুলো প্রতিরোধের জন্য নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান করা উচিত। পানিযুক্ত ফলমূল, ইলেকট্রলাইটিক সমৃদ্ধ পানীয় ও সঠিক খাদ্যাভাস শরীরের পানির ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। দেহে পানিশূন্যতার লক্ষণ দেখা দিলে, দ্রুত পানি বা তরল পানীয় গ্রহণ করা উচিত।
২. পানিশূন্যতার লক্ষণ :-
দেহে পানিশূন্যতা দেখা গেলে আমদের নানা ধরনের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। পানিশূন্যতার মাত্রার উপর নির্ভর করে লক্ষনগুলো হালকা থেকে গুরুতর হতে পারে। নিচে তা বিস্তারিতভাবে বলা হলো :-
★সাধারন বা প্রাথমিক লক্ষণ
* অতিরিক্ত পানির পিপাসা অনুভব করা - শরীর পানির ঘাটতি বুঝতে পারে এবং বেশি পানির প্রয়োজন হয়।
•মুখ ও গলা শুকিয়ে যেতে পারে।
* পানি কম খেলে কিডনিতে কম প্রস্রাব হয়, ফলে প্রস্রাবের পরিমান কমে যায়।
•পর্য়াপ্ত পরিমানে পানি পান না করার ফলে প্রস্রাবের রঙ হলুদ বা কমলা হয়ে যেতে পারে।
* শরীরে পানির অভাব দেখা দিলে শরীরে ক্লান্তি অনুভূত হতে পারে।
★মাঝারি মাত্রার পানিশূন্যতার লক্ষণ
•পানির অভাবে রক্তচাল বেড়ে যেতে পারে, ফলে মাথা ঘোরা বা ঝিমুনি হতে পারে।
•পানির অভাবে ত্বক আর্দ্র হয়ে যায়, ফলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে এবং ফেটে যেতে পারে।
•পানি ও ইলেকট্রলাইটের ভারসাম্য নষ্ট হলে খিচুনি রোগ দ্রখা দিতে পারে।
•শরীরে পানি কম হলে রক্তচাপ বেড়ে যায় ফলে হৃদযন্ত্রর স্পন্দন বেড়ে যেতে পারে যা অত্যন্ত ক্ষতিকর।
* পানিশূন্যতার ফলে চোখ শুকিয়ে যেতে পারে এবং ফ্যাকাশে হতে পারে। ফলে চোখের জ্যোতি কমে যেতে পারে।
★গুরুতর পানিশূন্যতার লক্ষণ
* শরীরে পর্যাপ্ত পরিমানে পানি না থাকলে রক্তচাপ মারাত্মকভাবে কমে যেতে পারে।
•মস্তিষ্ক পর্যাপ্ত অক্সিজেন না পেলে মানসিক বিভ্রান্তি, ভুল ভাবনা ও অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
•পানির অভাবে শরীরের বিপাক ক্রিয়া দ্রুত হয়, ফলে শ্বাস - প্রশ্বাসের হাড় বেড়ে যায়।
•পানির অভাবে ত্বক টানটান হয়ে যায় এবং চাপ দিলে সহজে আগের অবস্থায় ফিরে আসে না।
•গুরুতর পানিশূন্যতায় কিডনি প্রস্রাব উৎপাদন বন্ধ করে দিতে পারে যা অত্যন্ত বিপদজনক।
•চরম পর্যায়ের পানিশূন্যতা দেখা দিলে ব্যাক্তি অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে।
★শিশুদের ক্ষেত্রে পানিশূন্যতার লক্ষণ
•বারবার কান্না করা কিন্তু চোখে জল না থাকা।
•নরম তালু বসে যাওয়া।
•ঠোঁট ও জিহ্বা শুকিয়ে যাওয়া।
•প্রস্রাব কম হওয়া বা ডায়াপার শুষ্ক থাকা।
★বৃদ্ধদের৷ ক্ষেত্রে পানিশূন্যতার লক্ষণ
•অতিরিক্ত দুর্বলতা ও ক্লান্তি অনুভব করা।
•কথা বলতে অসুবিধা হওয়া বা বিভ্রান্তি দেখা দেয়া।
•মাথা ঘোরা ও পড়ে যাওয়ার ঝুকি বৃদ্ধি পাওয়া।
যদি কেউ দীর্ঘসময় পানিশূন্যতার লক্ষণ অনুভব করেন, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
৩. পানিশূন্যতার ক্ষতিকর প্রভাব
পানিশূন্যতা শরীরের শারীরিক কার্যক্রম ব্যাহত করে এবং নানবিধ ক্ষতি সাধন করে। এটি হালকা থেকে গুরুতর অবস্থায় যেতে পারে। যেমন :-
•শারীরিক দূর্বলতা ও ক্লান্তি - পানির অভাবে শরীর পর্যাপ্ত শক্তি উৎপাদন করতে পারে না, ফলে দুর্বলতা, অবসাধ ও অলসতা অনুভূত হয়।
•রক্তচাপ কমে যাওয়া - পানি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখে, পানিশূন্যতা দেখা দিলে ঝিমুনি, মাথা গোরা দেখা দিতে পারে।
•মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ব্যাহত হওয়া - পর্যাপ্ত পানি না থাকলে মনোযোগ কমে যায়, স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে যেতে পারে।
•হজমজিনিত সমস্যা - পানির অভাবে হজমক্রিয়া ধীরগতির হয়, ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস্ট্রিক ও অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
•কিডনির ক্ষতি ও প্রস্রাবের সমস্যা - কিডনি শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করে দিতে সহায়তা করে কিন্তু পানির অভাবে কিডনির কার্যক্ষমতা কমে যায়। এতে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমে।
•ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া ও রুক্ষ হয়ে যাওয়া - পানির অভাবে ত্বক আর্দ্র ও শুষ্ক হয়ে যায়।
•শরীরে ইলেকট্রলাইটের ভারসাম্য নষ্ট হলে পেশিতে খিচুনি হয়।
•পানিশূন্যতার কারণে রক্ত ঘন হয়ে যেতে পারে, যা হৃদযন্ত্রের ওপর চাপ সৃষ্টি করে এবং হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক এর সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
•অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা গেলে শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
* পানির অভাবজনিত কারনে আমদের দেহের ইমিউনিটি সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে।
•গর্ভবতী নারীদের ঝুঁকি - গর্ভাবস্থায় পানিশূন্যতা হলে পানির পর্যাপ্ত পুষ্টি ও অক্সিজেন সরবরাহ হতে পারে, যা গর্ভস্থ শিশুর বৃদ্ধিতে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
•শিশুদের ক্ষেত্রে মারাত্মক সমস্যা - শিশুরা পানিশূন্যতায় বেশি সংবেদনশীল। এটি হলে তাদের মধ্যে অতিরিক্ত কান্না, ওজন কমে যাওয়া এবং ডায়রিয়ার ঝুঁকি দেখা দিতে পারে।
•শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সমস্যা - শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পানি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। পানি সহজেই গরম হয়ে যেতে পারে এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
•মৃত্যুর ঝুঁকি বৃদ্ধি - গুরুতর পানিশূন্যতা হলে শরীরের অঙ্গপ্রতঙ্গ বিকল হয়ে যেতে পারে যা মৃত্যুর কারণ হয়ে উঠতে পারে।
পানিশূন্যতা শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে।তাই সুস্থ থাকতে হলে নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান করা উচিত। শরীরের পানি ভারসাম্য বজায় রাখতে সঠিক খাদ্যাভাস ও পর্যাপ্ত তরল গ্রহন করা উচিত।
৪. শরীরের পানিশূন্যতা দূর করার উপায়
পানিসাম্যতা দূর করার জন্য শরীরের পানির ভারসাম্য বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। এটি শুধু পর্যাপ্ত পানি পান করার মাধ্যমেই নয় বরং সঠিক খাদ্যাভাস ও জীবনযাপনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। নিচে বিস্তারিত উপস্থাপন করা হলো :-
★ পর্যাপ্ত পানি পান করা
শরীরে পানির ঘাটতি দূর করতে দিনে ৮-১০ গ্লাস বা ২-৩ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন। তবে অতিরিক্ত গরম আবহাওয়া, ব্যায়াম বা ডায়রিয়ার সময় বেশি পরিমান পানি পান করা উচিত।
★ইলেকট্রোলাইটের সমৃদ্ধ পানীয় গ্রহন করা
শুধু পানি নয়, শরীরের সোডিয়াম, পটাশিয়াম ও মিনারেলস বজায় রাখতে ওরস্যালাইন, নারকেলের পানি ও ফ্রুটজুস পান করা দরকার।
★পানিযুক্ত খাবার খাওয়া
•শসা, তরমুজ, আনারস, কমলা স্ট্রবেরি
•দুধ, দই, স্যুপ
•লাউ, কুমড়া ও শাকসবজি
★অতিরিক্ত ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল এড়িয়ে চলা
ক্যাফেইন যেমন- চা, কফি ও অ্যালকোহল শরীর থেকে বেশি পানি বের করে দেয়, যা পানিশূন্যতা বাড়াতে পারে। তাই এগুলো কম পরিমানে গ্রহণ করা উচিত।
★প্রচন্ড গরম ও রোদে সরাসরি না যাওয়া
অতিরিক্ত গরমে শরীর থেকে পানি দ্রুত বের হয়ে যায়। তাই সূর্যের তীব্রতা বেশি থাকলে ছাতা বা ক্যাপ ব্যাবহার করা এবং যথেষ্ট পরিমান পানি পান করা জরুরি।
★ হালকা লবণযুক্ত পানি পান করা
শরীরের লবণের ঘাটতি পূরণ করতে মাঝে মাঝে সামান্য লবণ মিশ্রিত পানি পান করা যেতে পারে যা পানিশূন্যতা রোধে সহায়ক।
★রোগাক্রান্ত হলে তরল খাবার গ্রহন
ডায়রিয়া, জ্বড় বা বমির কারণে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিলে বেশি পরিমান পানি, ওরস্যালাইন, ফ্রুট জুস ও সুপ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
★নিয়মিত সুষম খাদ্য গ্রহণ করা
যেসব খাবারে উচ্চ পরিমান পানি ও পুষ্টি উপাদান রয়েছে সেগুলো নিয়মিত অবশ্যই খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত। বিশেষ করে ফলমূল, শাক সবজি ও তরল সমৃদ্ধ খাবার এ সমস্যায় খাওয়া ভালো।
★শিশুর ক্ষেত্রে বিশেষ যত্ন নেওয়া
সাধারণত এ রোগে বা পানিশূন্যতায় শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে। তাই তাদে প্রতি বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন এক্ষেত্রে তাদের মাতৃদুগ্ধ, ওরস্যালাইন ও পানিযুক্ত খাবার বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত।
★ কখন চিকিৎসক এর পরামর্শ নেবেন?
যদি শরীরে পানিশূন্যতা বেশি হয়ে যায় এবং শরীরে কিছু গুরুতর লক্ষণ দেখা দেয় তাহলে দ্রুত চিকিৎসক এর পরামর্শ নেওয়া উচিত। যেমন:-
* ৬-৮ ঘন্টা বা তার বেশি সময় ধরে প্রস্রাব না হলে বা প্রস্রাবের রঙ হলুদ হয়ে গেলে।
•যদি চলাফেরা করতে সমস্যা হয়, মাথা ঘোরে, বা ঝাপসা দেখা যায় অথবা দুর্বলতা এত বেশি হয় যে দাঁড়িয়ে থাকা কষ্টকর হয়ে যায় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
•মুখ ও ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে গেলে।
•তীব্র পিপাসা থাকা সত্ত্বেও যদি পানি পান করতে সমস্যা হয় বা বমি পায় তাওলেও যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসক এর পরামর্শ নেওয়া উচিত।
•পানি কম থাকার ফলে যদি শরীরে হার্টবিট ও শ্বাস প্রশ্বাসের হাড় বেড়ে যায় তাহলেও চিকিৎসক এর শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন।
* পানির ঘাটতির ফলে অনেক সময় রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। এ সময় চিকিৎসক এর কাছে যাওয়া প্রয়োজন।
•অতিরিক্ত ডিহাইড্রেশন এর ফলে অনেক সময় কেউ একটুতেই অজ্ঞান বা সংগাহীন হয়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
•পানিশূন্যতার কারনে অনেক সময় ডায়রিয়া বা বমি তিন দিনের বেশি শরীরে স্থায়ী হতে পারে।এক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসক এর শরণাপন্ন হওয়ার প্রয়োজন।
হালকা পানিশূন্যতা সাধারণ বাড়িতে সঠিক যত্নের মাধ্যমে দূর করা যায়, তবে যদি উপরের গুরুতর লক্ষণগুলো দেখা দেয় তাহলে দ্রুত চিকিৎসক এর পরামর্শ নেওয়া উচিত। সময়মতো চিকিৎসা না নিলে শরীরের অঙ্গপ্রতঙ্গ বিকল হয়ে যেতে পারে।
৫. বিশেষ পরামর্শ :-
পানিশূন্যতা এড়াতে আপনি কিছু বিশেষ পন্থা অবলম্বন করতে পারেন। যেমন:-
•প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি অয়ান করুন - ৮-১০ গ্লাস বা ২-৩ লিটার পানি।
•সকালবেলা পানি পান করুন - ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস অয়ানি খাওয়ার অভ্যাস করুন।
•ক্যাফেইন ও সফট ড্রিংকস কম খান - এগুলো শরীর থেকে পানি বের করে দেয়।
•পানিযুক্ত খাবার খান - শসা, তরমুজ, কমলা, দই, লাউ ইত্যাদি বেশি খান।
•গরমে সতর্ক থাকুন - বাহিরে বের হলে ছাতা বা টুপি ব্যাবহার করুন এবং পানি সাথে রাখুন।
•ব্যায়ামের পর পানি পান করুন - ঘামের কারনে অনেক পানি আমাদের শরীর থেকে বের হয়ে যায়। তাই সেই পানি ঘাটতি পূরণ করতে বেশি বেশি করে পানি পান করুন।
•ইলেকট্রোলাইট পানীয় খান - বিশেষ করে অতিরিক্ত ঘাম বা ডায়রিয়ার সময়ে।
মন্তব্য :-
উপরের আলোচনা থেকে এই কথাটি আর বলতে কোনোভাবেই বাকি রাখে না যে, সঠিক সময়ে সঠিক নিয়ম মেনে না চললে পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন আমদের শরীরের জন্য অত্যন্ত বিপদজনক হতে পারে। তবে এ কথাটিও আপনারা বুঝে গেছেন এর প্রতিকারও অনেক সহজ। এটিকে যত্নের মাধ্যমে প্রতিরোধ করা সম্ভব। দৈনন্দিন জীবন পর্যাপ্ত পানি পান স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস ও নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে শরীরের পানির ভারসাম্য বজায় রাখা উচিত। যদি শরীরে পানির অভাব হয়, তবে তা গুরুতর শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। যেমন :- মাথা ঘোরা, রক্তচাপ কমে যাওয়া , দুর্বলতা বা আরও গুরুতর পরিস্থিতি। এই কারনে পানিশূন্যতা এড়ানোর জন্য সচেতন হওয়া জরুরি। হালকা উপসর্গগুলো দেখা দিলে দ্রুত পানি পান করে সমস্যার সমাধান করা যায়। তবে গুরুতর পরিস্থিতিতে অবশ্যই চিকিৎসক এর শরণাপন্ন হওয়ার প্রয়োজন।
তাহলে আজ এ পর্যন্তই। সুস্থ থাকুন, আমাদের সাথেই থাকুন, পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধ করতে অবশ্যই উপরের টিপসগুলো মাথায় রাখুন। আর সবশেষে, আজকের কন্টেন্ট টি আপনাদের কেমন লেগেছে তা কিন্তু জানাতে ভুলবেন না।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url